গলমাছি বা নলিমাছি এর আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষায় কৃষকের করণীয়

গলমাছি বা নলিমাছি এর আক্রমনে সাধারণত ধানের ফলন শতকরা প্রায় ৩০ –৪০ ভাগ কমে যেতে পারে।

গলমাছি বা নলিমাছি এর ক্ষতির ধরণঃ

  • স্ত্রী গলমাছি পাতার নীচের পাশে ডিম পাড়ে, তবে মাঝে মধ্যে পাতার খোলের উপরও ডিম পাড়ে। এ পোকার আক্রামণের ফলে ধান গাছের মাঝখানের পাতাটা পেঁয়াজ পাতার মত নলাকার হয়ে যায়। ফলে কুশিতে আর শীষ হয় না।
  • এ পোকার আক্রমণের ফলে ধান গাছের মাঝখানের পাতাটা পিঁয়াজ পাতার মত নলাকার হয়ে যায়। এ জন্য এ পোকার ক্ষতির নমুনাকে “পিঁয়াজ পাতার গল” বলা হয়ে থাকে।
  • এ গলের বা নলের প্রথামাবস্থায় রঙ হালকা উজ্জ্বল সাদা বলে একে “সিলভার শুট বা রুপালী পাতা” বলা হয়।
  • গল হলে সে গাছে আর শীষ বের হয় না। তবে গাছে কাইচ থোড় এসে গেলে গলমাছি আর গল সৃষ্টি করতে পারে না।
  • গলমাছি দেখতে অনেকটা মশার মত, পেটটা উজ্জল লাল রংয়ের । স্ত্রী গলমাছি মূল পাতার উপর একটি করে ডিম পাড়ে । ডিম থেকে কীড়া পুত্তলীতে পরিণত হয় । এর আক্রমণে ধানের ডিগপাতা পেঁয়াজ পাতার মতো নলাকার হয়ে যায় ।

গলমাছি বা নলিমাছি এর আক্রমণের পর্যায়ঃ কুশি।

গলমাছি বা নলিমাছি ফসলের যে অংশে আক্রমণ করেঃ আগা, কাণ্ড, কচি পাতা, পাতা, ডগা।

গলমাছি বা নলিমাছি এর যেসব স্তর ক্ষতি করেঃ কীড়া।

মাজরা পোকার আক্রমণ কি কারণে হয়েছেঃ
যে সমস্ত অঞ্চলে শুধু শুষ্ক ও বর্ষা মৌসুম বিদ্যমান, সে সব অঞ্চলে বর্ষা মৌসুমের আগাম ধান ক্ষতি এড়িয়ে যেতে পারে।
বর্ষা মৌসুমের শেষের দিকে রোপণ করলে সমূহ ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে, যে সমস্ত ক্ষেতে প্রায় সব সময়ই দাঁড়ানো পানি থাকে সে সব ক্ষেতেই এই পোকা বেশি আক্রমণ করে।

গলমাছি বা নলিমাছি এর দমন ব্যবস্থাপনাঃ


গলমাছি বা নলিমাছি এর জৈবিক দমনঃ

  • আলোর ফাঁদের সাহায্যে পূর্ণবয়স্ক গলমাছি ধরে ধ্বংস করা।


গলমাছি বা নলিমাছি এর রাসায়নিক দমনঃ

  • জমিতে শতকরা ৫ ভাগ পাতায় লক্ষণ দেখা গেলে বালাইনাশক ব্যবহার করুন। আক্রমনের মাত্রা বেশী হলে বালাইনাশক ব্যাবহার করা যেতে পারে ডায়াজিনন, কার্বারিল, কার্বোসালফান, ফিপ্রোনিল, ক্লোরপাইরিফস, সাইপারমেথ্রিন, কুইনালফস জাতীয় বালাইনাশক ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ১০ দিন পরপর ২-৩ বার বিকালে স্প্রে করুন। অন্যান্য পোকার মতো এ পোকার বিরুদ্ধে এখনও একাধিক দমন ব্যবস্থা উদ্ভাবন হয়নি। তাই বালাইনাশক দিয়ে দমন করাই একমাত্র ব্যবস্থা।

সাবধানতাঃ

  • বালাইনাশক ব্যবহারের ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, একই গ্রুপের বালাইনাশক একই পোকা দমনের জন্য পর্যায়ক্রমে প্রতি মৌসমে ব্যবহার না করে বিভিন্ন গ্রুপের বালাইনাশক ব্যবহার করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়।
  • জমি আগাছা মুক্ত রাখতে হবে।
  • ফসল কাটার পর জমির নাড়া পুড়িয়ে ফেলা।

+ There are no comments

Add yours